সংগ্রহ : প্রথম আলো
পুঁজিবাজারে শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করতে হলে নতুন কোম্পানিকে পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে যেকোনো ধরনের ‘প্লেসমেন্ট’ শেয়ারকেও নিরুত্সাহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রাক্-আইপিও প্লেসমেন্টের সুযোগ না রাখার কথা বলা হয়েছে বৈঠকে। অর্থাত্ আইপিওতে আসার আগেই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। বরাদ্দ দেওয়া হলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তা ‘লক-ইন’ থাকবে। অর্থাত্ নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শেয়ারগুলো বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজারসংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গতকাল এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আ হ ম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আ হ ম মোস্তফা কামাল বৈঠকে বাজার-ব্যবস্থাপনার জোরালো সমালোচনা করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয় এসব বিষয়ে এসইসিকে দিকনির্দেশনা দেবে। এর ভিত্তিতেই এসইসি সিদ্ধান্ত নেবে।
সূত্রটি জানায়, বৈঠকে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে বাজারে সমস্যা হচ্ছে। তাই মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের প্রাক্-আইপিও প্লেসমেন্টের সুযোগ রাখা যাবে না। বিকল্প হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লক-ইন আরোপ করা যেতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে ব্যক্তি খাতের কোনো কোম্পানিকে আর সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ না দেওয়ার পক্ষে জোরালো মতামত দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বলা হয়, সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে কয়েকটি কোম্পানি বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে সরাসরি তালিকাভুক্তি নয়, আইপিওর মাধ্যমে আসতে হবে। সরাসরি তালিকাভুক্ত হতে পারবে শুধু সরকারি কোম্পানিগুলো। তবে ব্যক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে ‘বুক বিল্ডিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে শেয়ার ছাড়ার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
জানা গেছে, বৈঠকে বলা হয়েছে বাজারে শেয়ারের সরবরাহ কম। কিন্তু সে তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। অর্থাত্ কম পরিমাণ শেয়ারের প্রতি বেশি পরিমাণ পুঁজি ধাবিত হচ্ছে। সে কারণেই বাজারে কেবল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সরবরাহ বাড়ানোর অংশ হিসেবে বৈঠকে সরকারি কোম্পানির শেয়ার দ্রুততার সঙ্গে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে নিয়ে আসার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি ডেসকো, পাওয়ার গ্রিড, তিতাস গ্যাস, যমুনা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, গত তিন বছরে বেসরকারি খাতের তিনটি কোম্পানি—এসিআই ফরমুলেশন, শাইনপুকুর সিরামিকস ও নাভানা সিএনজি পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিগুলো পৃথকভাবে মাত্র ৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার ছেড়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে বাজার থেকে ৭৯৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। পরে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আ হ ম মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনিও কোনো কথা বলতে অপারগতার কথা জানান।
যোগাযোগ করলে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যদি বৈঠকে এ ধরনের মতামত দেওয়া হয়ে থাকে, তবে আমি বলব, মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাক্-আইপিও প্লেসমেন্টের সুযোগ না রাখার সিদ্ধান্তটি ছাড়া বাকিগুলোর একটিও বাজারবান্ধব নয়।’
এ বি মির্জ্জা আরও বলেন, বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটমূল্য যেহেতু অতি মূল্যায়িত হয়ে গেছে, তাই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের দিক বিবেচনা করলে প্লেসমেন্টের সুযোগ না রাখাই যৌক্তিক হবে। তবে সরকারি ছাড়া ব্যক্তি খাতের অন্য কোম্পানি সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে আসার পথ বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ধরা যাক, একটি ওষুধ কোম্পানি ১০ বছর ধরে ভালো ব্যবসা করছে। ভালো মানের ওষুধ উত্পাদন, বাজারজাত ও রপ্তানি করে ইতিমধ্যে বাজারে সুনাম অর্জন করেছে এবং ব্র্যান্ড কোম্পানি হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। সেই কোম্পানিটি কেন অভিহিত মূল্যেই শেয়ার ছাড়তে চাইবে? সুতরাং শেয়ার সরবরাহ বাড়াতে চাওয়ার সঙ্গে সরকারের এমন সিদ্ধান্তটি স্ববিরোধী।
নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহের বাধ্যবাধকতার সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেন মির্জ্জা আজিজ। তিনি বলেন, এটিও একটি বাজারবিমুখ সিদ্ধান্ত। এমন নিয়ম করা হলে তাঁর ধারণা, কোম্পানিগুলো বাজারে আর আসতেই চাইবে না, যা দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত পুঁজিবাজারসংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গতকাল এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আ হ ম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আ হ ম মোস্তফা কামাল বৈঠকে বাজার-ব্যবস্থাপনার জোরালো সমালোচনা করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয় এসব বিষয়ে এসইসিকে দিকনির্দেশনা দেবে। এর ভিত্তিতেই এসইসি সিদ্ধান্ত নেবে।
সূত্রটি জানায়, বৈঠকে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে বাজারে সমস্যা হচ্ছে। তাই মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের প্রাক্-আইপিও প্লেসমেন্টের সুযোগ রাখা যাবে না। বিকল্প হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লক-ইন আরোপ করা যেতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে ব্যক্তি খাতের কোনো কোম্পানিকে আর সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ না দেওয়ার পক্ষে জোরালো মতামত দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বলা হয়, সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে কয়েকটি কোম্পানি বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে সরাসরি তালিকাভুক্তি নয়, আইপিওর মাধ্যমে আসতে হবে। সরাসরি তালিকাভুক্ত হতে পারবে শুধু সরকারি কোম্পানিগুলো। তবে ব্যক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে ‘বুক বিল্ডিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে শেয়ার ছাড়ার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
জানা গেছে, বৈঠকে বলা হয়েছে বাজারে শেয়ারের সরবরাহ কম। কিন্তু সে তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। অর্থাত্ কম পরিমাণ শেয়ারের প্রতি বেশি পরিমাণ পুঁজি ধাবিত হচ্ছে। সে কারণেই বাজারে কেবল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সরবরাহ বাড়ানোর অংশ হিসেবে বৈঠকে সরকারি কোম্পানির শেয়ার দ্রুততার সঙ্গে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে নিয়ে আসার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি ডেসকো, পাওয়ার গ্রিড, তিতাস গ্যাস, যমুনা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, গত তিন বছরে বেসরকারি খাতের তিনটি কোম্পানি—এসিআই ফরমুলেশন, শাইনপুকুর সিরামিকস ও নাভানা সিএনজি পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিগুলো পৃথকভাবে মাত্র ৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার ছেড়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে বাজার থেকে ৭৯৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। পরে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আ হ ম মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনিও কোনো কথা বলতে অপারগতার কথা জানান।
যোগাযোগ করলে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যদি বৈঠকে এ ধরনের মতামত দেওয়া হয়ে থাকে, তবে আমি বলব, মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাক্-আইপিও প্লেসমেন্টের সুযোগ না রাখার সিদ্ধান্তটি ছাড়া বাকিগুলোর একটিও বাজারবান্ধব নয়।’
এ বি মির্জ্জা আরও বলেন, বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটমূল্য যেহেতু অতি মূল্যায়িত হয়ে গেছে, তাই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের দিক বিবেচনা করলে প্লেসমেন্টের সুযোগ না রাখাই যৌক্তিক হবে। তবে সরকারি ছাড়া ব্যক্তি খাতের অন্য কোম্পানি সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে আসার পথ বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ধরা যাক, একটি ওষুধ কোম্পানি ১০ বছর ধরে ভালো ব্যবসা করছে। ভালো মানের ওষুধ উত্পাদন, বাজারজাত ও রপ্তানি করে ইতিমধ্যে বাজারে সুনাম অর্জন করেছে এবং ব্র্যান্ড কোম্পানি হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। সেই কোম্পানিটি কেন অভিহিত মূল্যেই শেয়ার ছাড়তে চাইবে? সুতরাং শেয়ার সরবরাহ বাড়াতে চাওয়ার সঙ্গে সরকারের এমন সিদ্ধান্তটি স্ববিরোধী।
নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহের বাধ্যবাধকতার সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেন মির্জ্জা আজিজ। তিনি বলেন, এটিও একটি বাজারবিমুখ সিদ্ধান্ত। এমন নিয়ম করা হলে তাঁর ধারণা, কোম্পানিগুলো বাজারে আর আসতেই চাইবে না, যা দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
0 comments:
Post a Comment